প্রকাশিত: ১৬/০১/২০১৭ ৮:৩৭ এএম

নিউজ ডেস্ক::

দীর্ঘদিনের প্রেম। অতঃপর পালিয়ে বিয়ে। বর নগরীর ফিশারিঘাট এলাকায় বসবাসকারী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাস করা শিক্ষার্থী আলমগীর হোসেন। কনেও একই এলাকায় বসবাসকারী খাদিজা আলমগীর (ধর্মান্তরিত)। আলমগীরের বয়স ২৪। আর খাদিজার বয়স ১৯ বছর। এরপর পিছু দুইজনেরই পিছু নেয় মেয়ের পরিবারের সদস্যরা। গত শুক্রবার বিকেলে ডেবারপাড় বায়তুল আমান আবাসিক এলাকার একটি বাসায় মেয়ের ভাইসহ আরো ২৫/৩০ জনের একটি দল হামলা চালায়। এতে দুইজনের আর্ত চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সরে পড়েন মেয়ের ভাইসহ অন্যরা। এসময় খবর দেয়া হয় খুলশী থানা পুলিশকে। পুলিশ এসে আলমগীর ও খাদিজাকে উদ্ধার করে। কিছুক্ষণ পর কোতোয়ালি থানা পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয় দুইজনকে। থানায় রাখা হয় তাদেরকে। দফায় দফায় মেয়ের সাথে কথা বলেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কথা বলেন সাংবাদিকরাও। মেয়ে তার সিদ্ধান্তে অনড়। পুলিশের কাছে দেয়া বক্তব্যে খাদিজার স্পষ্ট কথা- আলমগীরকে সে ভালবেসে বিয়ে করেছে।

এ অবস্থায় মেয়ের ভাইসহ আত্মীয় স্বজন থানায় আসেন তাকে বুঝাতে। সারারাত তাকে বুঝানোর চেষ্টা করেন মা ও ভাইসহ অন্যান্যরা। এতেও অনড় খাদিজা। এ অবস্থায় শুক্রবার পুরোদিন রাত কেটে যায়। শনিবার আলমগীরের নামে নারী ও শিশু নির্যাতনের সংশ্লিষ্ট ধারায় একটি মামলা দিয়ে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় কোতোয়ালি থানা পুলিশ। এদিকে শনিবারও রাতদিন ওই মেয়েকে কোতোয়ালী থানায় রাখা হয়। দফায় দফায় আবারও তাকে বুঝানোর চেষ্টা হয়। কিন্তু খাদিজার কথা একটাই। আলমগীরকে ভালবেসেই সে বিয়ে করেছে।

শেষতক গতকাল তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। এরপর মহানগর হাকিম আদালতে গতকাল দুপুরে তাকে উপস্থাপন করা হয়। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনেও খাদিজা একই কথা বলেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী এডভোকেট আরিফ। পরে আদালত তাকে নিজ জিম্মায় দেয়ার আদেশ দেন। যথারীতি আইনজীবী আরিফ ওই মেয়েকে নিয়ে আদালত ভবন থেকে নীচে নামছিলেন। এ অবস্থায় মেয়ের ভাইসহ ১০/১২ জনের একটি দল তাকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় আলমগীরের মামা জয়নালসহ আরো কয়েকজনকে আঘাত করে তারা। স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে এ যাত্রায় তাকে থামিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা পরিষদ মার্কেটের সামনে একটি দোকানে ঢুকিয়ে রাখা হয়। খবর দেয়া হয় কোতোয়ালি থানা পুলিশকে। পুলিশ সদস্যরা সন্ধ্যায় তাকে উদ্ধার করে আবারো কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যায়। এনিয়ে দুইদিন এক প্রকার নির্ঘূম যন্ত্রণার মধ্যে কেটেছে খাদিজার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ যেন প্রেমের ‘শ্বাসরুদ্ধকর যন্ত্রণা’।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানান, এ ঘটনাটা নিয়ে দুইদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। আমরা দুইজনকে নিয়ম অনুযায়ী আদালতে উপস্থাপন করেছি। আদালত মেয়েকে তার নিজ জিম্মায় যাওয়ার জন্য বলেছেন।

তিনি আরো বলেন, ওই মেয়েকে আদালত থেকে নামার সময় টানা হেচঁড়ার বিষয়টি শুনেছি। আমরা থানায় নিয়ে এসেছি। এ বিষয়ে আদালতের আদেশ যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হবে। এক্ষেত্রে আদালতের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই কারো। এ ব্যাপারে এডভোকেট আরিফ ও আলমগীরের মামা জয়নাল বলেন, আদালতের আদেশের পরও এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন।এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ১১টা) মেয়েটি কোতোয়ালি থানায় অবস্থান করছিলেন।
আজাদী

পাঠকের মতামত

মা ও মেয়ের একসঙ্গে এসএসসি পাস

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২, ৩ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য নুরুন্নাহার বেগম ৪৪ ...